একাদশ অধ্যায়
বৌদ্ধধর্মে রাজন্যবর্গের অবদান : সম্রাট কণিষ্ক
বৌদ্ধধর্মের প্রচার-প্রসারে বহু রাজা ও রাজন্যবর্গের অবদান ছিল। তাঁদের মধ্যে রাজা বিম্বিসার, অজাতশত্রু, প্রসেনজিত, অশোক, কণিষ্ক ছিলেন অন্যতম। ইতোপূর্বে আমরা রাজা বিম্বিসার, সম্রাট অশোক সম্পর্কে পড়েছি। এ অধ্যায়ে সম্রাট কনিষ্ক সম্পর্কে পড়ব ।
এ অধ্যায় শেষে আমরা-
* সম্রাট কণিষ্কের জীবন কাহিনী বর্ণনা করতে পারব।
* বৌদ্ধধর্মের প্রচার প্রসারে সম্রাট কণিষ্কের অবদান ব্যাখ্যা করতে পারব।
* বৌদ্ধধর্মের পৃষ্ঠপোষকতা এবং শিল্পকলা ও স্থাপত্যে সম্রাট কণিষ্কের অবদান মূল্যায়ন করতে পারব।
পাঠ : ১
সম্রাট কণিষ্ক
সম্রাট কণিষ্ক ছিলেন কুষাণ বংশের শ্রেষ্ঠ নৃপতি। কুষাণগণ চিন সীমান্ত থেকে আগত ইউ-চি জাতির শাখা। ইউ-চি জাতি চিন সীমান্তে বাস করত। কালক্রমে তারা শকদেরকে পরাজিত করে অক্ষু নদীর তীরে বসবাস করতে থাকে। পরে পহ্লবদের রাজ্য অধিকার করে সেখানে স্থায়ী বসবাস শুরু করে। ইউ-চি জাতির পাঁচটি শাখার মধ্যে কুষাণগণ সর্বাপেক্ষা শক্তিশালী ছিল।
কুষাণ বংশের সর্বশ্রেষ্ঠ রাজা ছিলেন কণিক। তাঁর রাজত্বকাল খ্রিষ্টীয় দ্বিতীয় শতক। তিনি খোটানের রাজা বিজয়কীর্তি ও বৌদ্ধ দার্শনিক নাগার্জুনের সমসাময়িক ছিলেন। তিনি উত্তর ভারত সম্পূর্ণ জয় করেছিলেন। গান্ধার এবং কাশ্মীর থেকে বেনারস পর্যন্ত এক বিস্তীর্ণ অঞ্চল তাঁর সাম্রাজ্যভুক্ত ছিল। তিনি রাজ্য জয়ের নেশায় নিয়মিত সৈন্যদল নিয়ে পরিভ্রমণ করতেন। তিনি কাশ্মীরে কণিষ্কপুর নামক একটি নগর প্রতিষ্ঠা করেছিলেন । তিনি পেশওয়ারে (পুরুষ পুরে) স্থায়ী প্রাসাদ গড়ে তুলেছিলেন। কণিষ্কের সিংহাসনে আরোহণের বছর থেকে তিনি একটি নতুন অব্দের প্রবর্তন করেছিলেন। তা শকাব্দ নামে পরিচিত ছিল।
সম্রাট কণিষ্ক নিজে সৈন্যদল পরিচালনা করতেন। বৃদ্ধ বয়সে তিনি এক বিশাল সৈন্যদল নিয়ে সুঙ- লিঙ পর্বত অতিক্রম করতে গিয়ে মৃত্যুবরণ করেন। সুপ্ত লিঙ পর্বত পামীর উপত্যকা ও খোটানের মধ্যবর্তি স্থানে অবস্থিত ছিল।
সম্রাট কণিষ্ক অত্যন্ত জনদরদী রাজা ছিলেন। জনসাধারণের কল্যাণ সাধনে তিনি সর্বদা সচেষ্ট ছিলেন। তক্ষশীলা দলিল থেকে জানা যায় যে, জনকল্যাণমূলক কর্মকাণ্ডের স্বীকৃতি স্বরূপ তিনি 'দেবপুত্র' উপাধিতে ভূষিত হন। তিনি ব্যবসা বাণিজ্য ও কৃষির সম্প্রসারণেও উদ্যোগী ছিলেন। রোমের স্বর্ণমুদ্রা 'রোমান সলিডাস এর অনুকরণে সম্রাট কণিষ্ক তাঁর সাম্রাজ্যে স্বর্ণমুদ্রার প্রচলন করেছিলেন।
বৌদ্ধধর্মে রাজন্যবর্গের অবদান সম্রাট কণিক
১২৫
কণিষ্ক তাঁর শাসন ব্যবস্থা বিকেন্দ্রীকরণ করেছিলেন। তাঁর শাসনব্যবস্থায় সর্বনিম্ন স্তরে ছিল গ্রাম। গ্রামের প্রধানকে 'গ্রামিক' বলা হতো। 'নবকর্মিক' নামে এক ধরনের কর্মচারী ছিল যাঁরা ধর্ম ও সেবামূলক কাজগুলোতে সহায়তা করতেন। সমগ্র সাম্রাজ্য পূর্বাঞ্চল ও উত্তরাঞ্চল দুইভাগে বিভক্ত করে পৃথক পৃথক শাসক নিয়োগ করে পরিচালনা করা হতো। এই শাসকগণ 'মহাক্ষত্রপ' নামে অভিহিত হতো। মহাক্ষত্রপগণের সহযোগীদের বলা হতো 'ক্ষত্রপ'। ক্ষত্রপগণ আঞ্চলিক প্রধান হিসেবে শাসনকার্য পরিচালনা করতেন। ক্ষত্রপদের অনেকে 'রাজা' অভিধায়ও খ্যাত হতেন।
সম্রাট কণিষ্ক বৌদ্ধধর্মের মহান পৃষ্ঠপোষক ছিলেন। সিংহাসনে আরোহণের কিছুকাল পূর্বে তিনি বৌদ্ধধর্মে দীক্ষিত হয়েছিলেন। রাজ্য জয়ের চেয়ে তিনি বৌদ্ধধর্ম প্রচার প্রসারে পৃষ্ঠপোষকতা করেই খ্যাতি অর্জন করেন। মৌর্যযুগে বৌদ্ধধর্মের বেশ প্রভাব থাকলেও পরবর্তি সময় তা কিছুটা দুর্বল হয়ে পড়ে । কিন্তু সম্রাট কণিষ্কের আমলে বৌদ্ধধর্ম আবার রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা লাভ করে। সজীব হয়ে ওঠেছিল। তাঁর স্বর্ণ ও তাম্র মুদ্রায় গ্রিক, হিন্দু ও নানা দেব-দেবীর মূর্তি অঙ্কিত ছিল। এ থেকে প্রমাণিত হয় যে, সম্রাট কণিষ্ক বৌদ্ধধর্মের পৃষ্ঠপোষকতা করলেও খুবই পরমতসহিষ্ণু ছিলেন। তিনি বিভিন্ন ধর্ম সম্পর্কে জ্ঞান আহরণের চেষ্টা করতেন এবং সকল ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধাসম্পন্ন ছিলেন।
অনুশীলনমূলক কাজ
কি কারণে সম্রাট কণিষ্ক বেশি খ্যাতি লাভ করেছিলেন ? তিনি কেন দেবপুত্র উপাধিতে ভূষিত হয়েছিলেন ?
পাঠ : ২ বৌদ্ধধর্মে সম্রাট কণিষ্কের অবদান
বৌদ্ধধর্মের প্রচার প্রসারে সম্রাট কণিষ্ক বিশেষ ভূমিকা রেখেছিলেন। এ কারণে তাঁর সুনাম ও সুখ্যাতি সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছিল। তিনি বৌদ্ধধর্মের পৃষ্ঠপোষকতার মাধ্যমে সমগ্র রাজ্যে মানবীয় মূল্যবোধকে জাগাতে চেষ্টা করেছেন। তাঁর কুলগুরু ছিলেন সংঘরক্ষ। তিনিও সুপণ্ডিত ছিলেন। সম্রাট অশোকের মতো সম্রাট কণিষ্কও বৌদ্ধধর্ম প্রচারের মাধ্যমে সর্বজনীন মানবিক মূল্যবোধকে তুলে ধরেন এবং ভারতবর্ষের সর্বশ্রেষ্ঠ নরপতি হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেন। তিনি প্রথমে রাজ্য বিস্তারে মনযোগ দিয়েছিলেন। কিন্তু পরে সেই রাষ্ট্রনীতি পরিত্যাগ করে তিনি ধর্মনীতি গ্রহণ করেছিলেন। কারণ তিনি উপলব্ধি করেছিলেন, রাজ্য বিস্তারের চেয়ে ধর্মনীতি প্রতিষ্ঠাই অধিক গুরুত্বপূর্ণ । তিনি পাটলিপুত্র জয় করে ফিরে আসার সময় বুদ্ধের কাষ্ঠ নির্মিত মূর্তি, ভিক্ষাপাত্র ও মহাকবি অশ্বঘোষকে সঙ্গে নিয়ে এসেছিলেন । পরে তিনি সে বুদ্ধমূর্তি ও ভিক্ষাপাত্র রাজধানী পুরুষপুরে প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি অশ্বঘোষকে পুরুষপুর বিহারে অবস্থান করার জন্য অনুরোধ করেন। এ বিহারটি কালক্রমে কণিষ্ক
১২৬
বৌদ্ধধর্ম ও নৈতিক শিক্ষা
বিহার নামে পরিচিতি লাভ করে। সম্রাট কণিষ্কের সময় অশ্বঘোষের খুবই সুখ্যাতি ছিল। তিনি বহুবিধ গুণের অধিকারী ছিলেন। তিনি মহাকবি, দার্শনিক ও প্রথিতযশা বৌদ্ধ ভিক্ষু ছিলেন। এছাড়া বৌদ্ধধর্মে দীক্ষা গ্রহণের পূর্বে তিনি গায়ক, নায়ক, গীতিকার, সুরকার, সংগঠকও ছিলেন। তবে মহাকবি হিসেবেই তিনি সমধিক পরিচিত ছিলেন। মহাকবি অশ্বঘোষের কারণে সম্রাট কণিষ্কের খ্যাতি চারিদিকে ছড়িয়ে পড়েছিল এবং বৌদ্ধধর্মের ইতিহাসে আজও উভয়ের নাম স্মরণীয় হয়ে আছে । অশ্বঘোষের সূত্রালংকার গ্রন্থে সম্রাট কণিষ্কের পূর্ব ভারত জয়ের সংক্ষিপ্ত ইতিবৃত্ত আছে। সম্রাট কণিষ্ক পাটলিপুত্র জয়ের স্মৃতিকে ধরে রাখার জন্য পুরুষপুর স্তূপ ও বিহার নির্মাণ করেছিলেন। সম্রাট অশোকের 'দেবানামপিয়' অ্যাখ্যা নিয়ে পালি সাহিত্যে যেমন নানা কাহিনী প্রচলিত আছে, সেরূপ সম্রাট কণিষ্কেরও 'দেবপুত্র' উপাধি নিয়ে অনেক কথা ও কাহিনী সৃষ্টি হয়। মহাযানী বৌদ্ধরা তাঁকে দেবতা হিসেবে গণ্য করেন।
সম্রাট কণিক ইতিহাসে প্রধানত দুটি কারণে অমর হয়ে আছেন। প্রথমত তিনি যে বছর সিংহাসনে আরোহণ করেন সে বছর থেকে শকাব্দ প্রচলিত হয়। দ্বিতীয়ত তিনি বৌদ্ধধর্মের একনিষ্ঠ পৃষ্ঠপোষক হিসেবে জলন্ধরের কণিষ্ক বিহারে বৌদ্ধ সঙ্গীতি আহ্বান করেন। এটি বৌদ্ধধর্মের ইতিহাসে চতুর্থ মহাসঙ্গীতি নামে খ্যাত। সম্রাট কণিষ্ক বুদ্ধের পূতাস্থির ওপর স্তূপ নির্মাণ করিয়েছিলেন। এছাড়া বহু বৌদ্ধ ঐতিহাসিক স্থানে স্তূপ ও বিহার প্রতিষ্ঠা করেন ।
তিনি বৌদ্ধধর্ম গ্রহণ করার পর রাজকার্যের অবসরে বৌদ্ধধর্ম চর্চা করতেন। তিনি বুদ্ধবাণীর বিভিন্ন ব্যাখ্যা দেখে বিভ্রান্ত হয়ে পড়েন। তিনি অনুসন্ধান করে দেখলেন, বৌদ্ধধর্মের মূলতত্ত্ব নিয়েও সঙ্ঘের মধ্যে মতানৈক্য সৃষ্টি হয়েছে। তখন তিনি ধর্মগুরু পার্শ্বের সহযোগিতায় এক সঙ্গীতির অধিবেশন আহ্বান করেন। প্রখ্যাত দার্শনিক বসুমিত্রের সভাপতিত্বে এ মহাসভা অনুষ্ঠিত হয়। উপস্থিত ভিক্ষুসঙ্ঘের মধ্য থেকে পাঁচশত ভিক্ষু সংগীতির জন্য নির্বাচিত হন । অশ্বঘোষ সহসভাপতি হিসেবে সঙ্গীতিতে উপস্থিত ছিলেন।
তাঁরা সম্মিলিতভাবে মহাবিভাসাশাস্ত্র নামক ত্রিপিটকের টীকাগ্রন্থ রচনা করেন। এ সম্মেলনে মূল ত্রিপিটক সংগৃহীত হয়নি। পালি ভাষার পরিবর্তে সংস্কৃত ভাষায় মহাবিভাসাশাস্ত্র রচিত হয়েছিল এবং গ্রন্থটি মহাকবি অশ্বঘোষের তত্ত্বাবধানে সম্পাদিত হয়েছিল। মহাবিভাসাশাস্ত্র সর্বাস্তিবাদীদের মূল ধর্মগ্রন্থ জ্ঞানপ্রস্থান শাস্ত্রের টীকাগ্রন্থ হিসেবে বিবেচিত। এ কারণে এ সঙ্গীতিকে সবাস্তিবাদী সঙ্গীতিও বলা হয়। বসুবন্ধুর অভিধর্মকোষ মহাবিভাসাশাস্ত্রের অনুকরণে রচিত। সঙ্গীতি শেষে সমগ্র মহাবিভাসাশাস্ত্র তাম্রফলকে খোদাই করে সংরক্ষণ করা হয়েছিল। মহাযান ধর্মগ্রন্থ রচনার কারণে এ সঙ্গীতির গুরুত্ব অত্যধিক। এ সংগীতিতে সর্বাস্তিবাদীদের প্রধান ভূমিকা ছিল। সম্মেলন শেষে বিভিন্ন স্থানে ধর্মপ্রচারক প্রেরণ করা হয়েছিল। এ সর্বাস্তিবাদই মহাযান বৌদ্ধধর্ম নাম ধারণ করে তিব্বত, মঙ্গোলিয়া, চিন, জাপান, কোরিয়া প্রভৃতি দেশে প্রবেশ করে ।
বৌদ্ধধর্মে রাজন্যবর্গের অবদান সম্রাট কণিষ্ক
১২৭
সম্রাট কণিক সাহিত্যানুরাগীও ছিলেন। বিখ্যাত পণ্ডিতগণ তাঁর রাজসভা অলঙ্কৃত করতেন। তাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিলেন : মহাকবি অশ্বঘোষ, দার্শনিক নাগার্জুন ও বসুমিত্র এবং চিকিৎসা শাস্ত্রের গ্রন্থ রচয়িতা চরক, পার্শ্ব, সংঘরক্ষ ও মাঠর প্রমুখ। তাঁরা সম্রাট কণিষ্কের শাসনামলে ধর্ম, সাহিত্য, দর্শন, বিজ্ঞান এবং শিল্পকলার চর্চা ও বিকাশে বিশেষ ভূমিকা রেখেছিলেন। সম্রাট কণিষ্ক তাঁর সাম্রাজ্যে সৃজনশীল কল্যাণকর্মে বিশেষ পৃষ্ঠপোষকতা করতেন। সেসব অমরকীর্তির কারণে তিনি এখনো বিশ্বের ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে আছেন। মথুরার কাছে মাত নামক স্থানে খননকার্যের ফলে সম্রাট কণিষ্কের একটি পূর্ণাবয়ব মূর্তি পাওয়া গেছে। এছাড়া বিভিন্ন মুদ্রা ও স্মারকচিহ্ন আবিষ্কৃত হয়েছে, যা সম্রাট কণিষ্কের স্মৃতি ও ইতিহাসকে আমাদের সামনে তুলে ধরে।
অনুশীলনমূলক কাজ
মহাকবি অশ্বঘোষ কী কী গুণের অধিকারী ছিলেন? সম্রাট কণিকের আমলে অনুষ্ঠিত সংগীতিতে কে সভাপতিত্ব করেন ? সম্রাট কণিষ্কের রাজসভার পণ্ডিতদের নাম বলো।
পাঠ : ৩
বৌদ্ধশিল্প ও স্থাপত্য বিকাশে কণিষ্কের অবদান
বৌদ্ধশিল্প ও স্থাপত্য বিকাশে সম্রাট কণিষ্কের অবদান ঐতিহাসিকভাবে স্বীকৃত। মৌর্য আমলে বৌদ্ধ শিল্পকলার উদ্ভব হলেও এর বিকাশ ঘটেছিল কুষাণ আমলে। খ্রিষ্টীয় প্রথম শতকে কুষাণ আমলে গান্ধার অঞ্চলে গ্রিক ভাবধারায় এক শিল্প রীতির উদ্ভব হয়, যা গান্ধারা শিল্পকলা নামে পরিচিত। ক্রমে গ্রিক ভাবধারা বৌদ্ধধর্মের সংস্পর্শে এলে গান্ধারা শিল্পরীতিতে নতুন মাত্রা যোগ হয়। এ শিল্পরীতি অনুসরণ করে সম্রাট কণিষ্কের রাজত্ব কালে প্রথম বুদ্ধমূর্তি তৈরির সূচনা হয়। সম্রাট কণিষ্কের পৃষ্ঠপোষকতায় বৌদ্ধ ভাস্কর্য ও স্থাপত্য শিল্প উৎকর্ষতা লাভ করে সমগ্র ভারতবর্ষ এবং বহির্বিশ্বে ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। কৃষাণ সম্রাটদের প্রবর্তিত শিল্প ও স্থাপত্য রীতি বৌদ্ধ ধর্মপ্রচারক ও শিল্পাচার্যদের মাধ্যমে চিন, তিব্বত, মঙ্গোলিয়া, কোরিয়া ও জাপানে প্রসার লাভ করে।
কৃষাণ শিল্প প্রধানত দুটি ধারায় আত্মপ্রকাশ করে। একটি গান্ধারা শিল্প এবং দ্বিতীয়টি মথুরা শিল্প। এ দুই শিল্পের আদর্শই ছিল শান্তি, সম্প্রীতি ও মানবতাবোধের প্রকাশ। শাস্ত্রে উল্লিখিত সৌম্য স্থির দৃষ্টি সম্পন্ন বুদ্ধের কল্পিত প্রতিরূপ এবং বৌদ্ধ জাতকের কাহিনী গান্ধারা এবং মথুরা শিল্পকর্মের অন্যতম উৎস ও প্রেরণা ছিল। পেশওয়ারে কণিষ্কের রাজত্বকালে নির্মিত বৌদ্ধস্তূপ ও বৌদ্ধ বিহারগুলোর স্থাপত্য শৈলী আজও শিল্প জগতের অনন্য বিস্ময় হিসেবে মানুষের শ্রদ্ধা অর্জন করে।
অনুশীলনমূলক কাজ
পাছারা শিল্পরীতি কী?
কৃষাণ শিল্প প্রধানত কয়টি ধারায় আত্মপ্রকাশ লাভ করেছিল?